শঙ্করাচার্য্য, বৈষ্ণবীয় (জগদীশচন্দ্র/পঞ্চানন), বরাহপুরাণ, পদ্মপুরাণ, স্কন্দপুরাণ, মহাভারত
(গীতাশাস্ত্রী জগদীশচন্দ্র ঘোষ)*
ঋষি কহিলেন -
হে সূত, পুরাকালে নারায়ণ-ক্ষেত্রে ব্যাসদেব-কর্তৃক গীতা-মাহাত্ম্য যেরূপ কীর্তিত হইয়াছিল, আপনি তাহা যথাযথ বর্ণন-করুন । ১
সূত কহিলেন -
ভগবন্, আপনি উত্তম জিজ্ঞাসা করিয়াছেন; ইহা পরম গোপন বস্তু, সেই উত্তম গীতা-মাহাত্ম্য কে বর্ণন করিতে সমর্থ ? ২
কৃষ্ণই ইহা সম্যগরূপে জানেন, কুন্তীসুত অর্জুন, ব্যাসদেব, ব্যাসপুত্র শুকদেব, যাজ্ঞবল্ক ও মিথিলাধিপ জনক কথঞ্চিত অবগত আছেন । ৩
অন্যান্য সকলে অপরের নিকট শ্রবণ করিয়া তাহার লেশমাত্র কীর্তন করেন; আমিও ব্যাসদেবের মুখ হইতে যেরূপ শ্রবণ করিয়াছি, তাহাই এস্থলে কিঞ্চিৎ বলিতেছি । ৪
সমগ্র উপনিষদ্রাশি গাভীস্বরূপ, গোপালনন্দন ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ দোহনকর্তা, অর্জুন বৎস এবং মহৎ গীতামৃত দুগ্ধস্বরূপ, সুধীগণ তাহা পান করেন । ৫
যিনি লোকত্রয়ের উপকারার্থ প্রথমে অর্জুনের সারথ্য স্বীকার করিয়া এই গীতামৃত প্রদান করিয়াছেন, সেই পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণকে নমস্কার । ৬
যে মানব ঘোর সংসার-সাগর উত্তীর্ণ হইতে ইচ্ছা করেন, তিনি গীতারূপ নৌকার আশ্রয় গ্রহণ করিলে সুখে পার হইতে পারেন । ৭
যে পুনঃ পুনঃ শ্রবণ ও অভ্যাসদ্বারা গীতাজ্ঞান লাভ করে নাই, সে মূঢ় যদি মোক্ষ বাঞ্ছা করে, তবে বালকের নিকটও উপহাসাস্পদ হয় । ৮
যাঁহারা অহর্নিশ গীতাশাস্ত্র শ্রবণ বা অধ্যয়ন করেন, তাঁহাদিগকে মনুষ্যজ্ঞান করিবে না, তাঁহারা নিঃসংশয়ে দেবস্বরূপ । ৯
যে গীতাজ্ঞান দ্বারা শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে প্রবোধ দিয়াছিলেন, তাহাতে স্বগুণ অথবা নির্গুণ উৎকৃষ্ট ভক্তিতত্ত্ব ব্যাখ্যাত হইয়াছে । ১০
গীতার ভক্তিমুক্তিপ্রধান অষ্টাদশ (অধ্যায়রূপ) সোপান দ্বারা প্রেমভক্তি আদি কর্মে ক্রমশঃ চিত্তশুদ্ধি হয় । ১১
সাধুগণের গীতারূপ পবিত্র সলিলে স্নান সংসার মলনাশক, কিন্তু শ্রদ্ধাহীনের ঐ কার্য হস্তি-স্নানের ন্যায় নিষ্ফল হয় । ১২
যে ব্যক্তি গীতাশাস্ত্র অধ্যয়ন বা অধ্যাপনা করে নাই, মনুষ্যলোকে সে বৃথা কর্মকারী । ১৩
অতএব যে গীতাশাস্ত্র জানে না, তাহা অপেক্ষা অধম আর কেহ নাই, তাহার জ্ঞান, কুলশীল ও মনুষ্য-দেহকে ধিক্ । ১৪
গীতার্থ যে না জানে তাহা অপেক্ষা অধম আর কেহ নাই, তাহার মনুষ্য-দেহ, সদাচার, কল্যাণ, বিভব ও গৃহাশ্রমে ধিক্ । ১৫
গীতাশাস্ত্র যে জানে না তাহা অপেক্ষা অধম আর কেহই নাই; তাহার অদৃষ্ট, প্রতিষ্ঠা, পূজা, মান-মহত্ত্বে ধিক্ । ১৬
গীতাশাস্ত্রে যাহার মতি নাই, তাহার সমস্তই নিষ্ফল, তাহার শিক্ষাদাতাকে ধিক্, তাহার ব্রত, নিষ্ঠা, তপস্যা ও যশে ধিক্ । ১৭
যে গীতার্থ পাঠ করে নাই, তাহা অপেক্ষা অধম আর কেহ নাই; যে জ্ঞান গীতা-সম্মত নহে তাহা আসুর জ্ঞান; তাহা নিষ্ফল, ধর্মরহিত এবং বেদবেদান্ত-বহির্ভূত, যেহেতু ধর্মময়ী গীতা সর্বজ্ঞানপ্রদায়িনী; গীতা সর্বশাস্ত্রের সারভূত ও বিশুদ্ধ, তাহার তুল্য আর কিছু নাই । ১৮, ১৯
যে ব্যক্তি একাদশী বা বিষ্ণুর পর্বদিবসে গীতা পাঠ করেন, তিনি স্বপ্নে, জাগরণে, গমনে বা অবস্থানে, কোন অবস্থাতেই শত্রু-কর্তৃক পীড়িত হন না । ২০
শালগ্রাম শিলার নিকটে, দেবালয়ে, শিবমন্দিরে, তীর্থস্থানে বা নদীতটে গীতা পাঠ করিলে নিশ্চয়ই সৌভাগ্য লাভ হয় । ২১
দেবকীনন্দন শ্রীকৃষ্ণ গীতাপাঠে যেরূপ পরিতুষ্ট হন, বেদপাঠ, দান, যজ্ঞ, তীর্থদর্শন বা ব্রত্যাদি দ্বারা সেরূপ প্রসন্ন হন না । ২২
যিনি ভক্তিভাবে গীতা পাঠ করেন, তিনি বেদ-পুরাণাদি সমস্ত শাস্ত্র পাঠের ফল প্রাপ্ত হন । ২৩
যোগস্থানে, সিদ্ধপীঠে, শিলাময় দেবমূর্তির সমীপে, সাধুজনের সভাতে, যজ্ঞে বা বিষ্ণুভক্তের নিকটে গীতা পাঠ করিলে পরম সিদ্ধি লাভ হয় । ২৪
যিনি প্রতিদিন গীতা পাঠ বা শ্রবণ করেন, তিনি দক্ষিণাসহ অশ্বমেধাদি যজ্ঞ করেন বলিতে হইবে (অর্থাৎ ঐরূপ ফলপ্রাপ্ত হন) । ২৫
যিনি গীতার্থ শ্রবণ করেন অথবা কীর্তন করেন কিংবা অপরকে শ্রবণ করান, তিনি পরম পদ লাভ করেন । ২৬
যিনি যথাবিধি ভক্তিভাবে পরিশুদ্ধ গীতা পুস্তক সাদরে দান করেন, তাঁহার ভার্যা প্রিয় হয়; এবং তিনি যশঃ, সৌভাগ্য ও আরোগ্য লাভ করিয়া দয়িতাগণের প্রিয় হইয়া পরম সুখ ভোগ করেন, ইহাতে সংশয় নাই । ২৭, ২৮
যে গৃহে গীতার অর্চনা হয়, তথায় অভিচারোদ্ভূত বা ভয়ানক অভিশাপজনিত কোন দুঃখ উপস্থিত হয় না । ২৯
তথায় ত্রিতাপজনিত পীড়া, কোন প্রকার ব্যাধি, শাপ, পাপ, দুর্গতি বা নরক ঘটে না । ৩০
গীতার্চনা বা পাঠ করিলে দেহে বিস্ফোটকাদি হয় না; বরং উহাতে শ্রীকৃষ্ণচরণেই দাসত্ব ও অব্যভিচারিণী ভক্তি লাভ হয় । ৩১
গীতাভ্যাসরত ব্যক্তি প্রারব্ধ কর্মভোগের অধীন থাকিলেও সর্বজীবের সহিত সখ্যভাব লাভ করেন, তিনি সুখী ও মুক্ত হন, কর্ম তাঁহাকে বন্ধন করিতে পারে না । ৩২
মহাপাপ বা অতিপাপ করিলেও নলিনীদলগত জলের ন্যায় সেই পাপ গীতাধ্যায়ী ব্যক্তিকে স্পর্শ করিতে পারে না । ৩৩
অনাচার, অবাচ্য কথন, অভক্ষ্য ভক্ষণ এবং অস্পৃশ্য স্পর্শজনিত পাপ-সকল এবং জ্ঞানকৃত বা অজ্ঞানকৃত বা ইন্দ্রিয়জনিত যে কোন দোষই হউক না কেন, তাহা গীতা-পাঠমাত্রই বিনষ্ট হয় । ৩৪, ৩৫
সকলের অন্ন ভোজন এবং সর্বত্র প্রতিগ্রহ করিলেও গীতাপাঠকারীকে তজ্জনিত পাপ স্পর্শ করে না । ৩৬
অন্যায়পূর্বক রত্নপূর্ণা মহী প্রতিগ্রহ করিলেও একবার মাত্র গীতাপাঠ দ্বারা সে পাপ হইতে মুক্ত হইয়া স্বচ্ছ-স্ফটিকবৎ নির্মল হইয়া যায় । ৩৭
যাঁহার অন্তঃকরণ সর্বদা গীতায় অনুরক্ত থাকে, তিনিই সাগ্নিক, জাপক, ক্রিয়ান্বিত ও পণ্ডিত; তিনিই দর্শনীয়, ধনবান্, যোগী ও জ্ঞানবান্; তিনিই যাজ্ঞিক, যাজক ও সর্ববেদার্থদর্শী । ৩৮, ৩৯
যে স্থানে গীতা-পুস্তক থাকে এবং নিত্য গীতাপাঠ হয় তথায় ভূতলের প্রয়াগাদি সমুদয় তীর্থই বিদ্যমান থাকে । ৪০
যাঁহার গীতাপাঠাদিতে প্রবৃত্তি হয়, তাঁহার জীবিতকালে ও দেহাবসানেও সমস্ত দেবতা, ঋষিগণ ও যোগিগণ তাঁহার সহায় হইয়া থাকেন । ৪১, ৪২
যে স্থানে গীতাশাস্ত্রের বিচার, অধ্যয়ন বা অধ্যাপনা হয়, তথায় ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ শ্রীরাধিকা সহ আনন্দে বিরাজ করেন । ৪৩
ভগবান্ শ্রীকৃষ্ণ বলিলেন -
হে পার্থ, গীতাই আমার হৃদয়, গীতাই আমার সারসর্বস্ব, গীতাই আমার অত্যুগ্র এবং অব্যয় জ্ঞানস্বরূপ; গীতা আমার উত্তমস্থান, গীতা আমার পরম পদ, গীতা আমার পরম গুহ্য, গীতা আমার পরম গুরু; ৪৪-৪৫
গীতার আশ্রয়েই আমি থাকি, গীতাই আমার পরম গৃহ, গীতাজ্ঞান আশ্রয় করিয়াই আমি ত্রিলোক পালন করি । ৪৬
গীতা আমার ব্রহ্মরূপা পরমা বিদ্যা, ইহাতে সংশয় নাই, গীতা অর্ধমাত্রারূপিণী, নিত্যা, অনির্বচনীয়পদস্বরূপিণী । ৪৭
হে পাণ্ডব, আমি গীতার গুহ্য নামসমূহ বলিতেছি, শ্রবণ কর; ঐ নামসকল কীর্তন করিলে তৎক্ষণাৎ সমস্ত পাপ বিনষ্ট হইয়া যায় । ৪৮
গঙ্গা, গীতা, সাবিত্রী, সীতা, সত্যা, পতিব্রতা, ব্রহ্মাবলি, ব্রহ্মবিদ্যা, ত্রিসন্ধ্যা, মুক্তিগেহিনী, অর্ধমাত্রা, চিতা নন্দা (চিদানন্দা), ভবঘ্নী, ভ্রান্তিনাশিনী, বেদত্রয়ী, পরানন্দা, তত্ত্বার্থজ্ঞানমঞ্জরী । ৪৯, ৫০
যে ব্যক্তি স্থিরচিত্তে প্রত্যহ এই সকল নাম জপ করেন, তিনি ইহলোকে নিত্য জ্ঞানসিদ্ধি ও অন্তে পরম পদ প্রাপ্ত হন । ৫১
গীতা সম্পূর্ণ পাঠে অসমর্থ হইলে অর্ধেক পাঠ করিবে, তাহাতে গোদানের ফললাভ হইবে, সন্দেহ নাই । ৫২
এক-তৃতীয়াংশ পাঠ করিলে সোমযাগের এবং এক-ষষ্ঠাংশ পাঠ করিলে গঙ্গাস্নানের ফল লাভ হয় । ৫৩
যিনি নিত্য দুই অধ্যায় পাঠ করেন তিনি ইন্দ্রলোক প্রাপ্ত হন এবং তথায় এক কল্পকাল বাস করিয়া থাকেন । ৫৪
যিনি ভক্তিভাবে নিত্য এক অধ্যায় পাঠ করেন, তিনি রুদ্রলোক প্রাপ্ত হন এবং তথায় গণরূপে চিরকাল ভসতি করেন । ৫৫
যিনি এক অধ্যায়ের অর্ধাংশ বা চতুর্থাংশ নিত্য পাঠ করেন, তিনি সূর্যলোক প্রাপ্ত হইয়া শত মন্বন্তর তথায় বাস করেন । ৫৬
যিনি গীতার দশ, সাত, পাঁচ, চারি, তিন, দুই, এক বা অর্ধ শ্লোকও পাঠ করেন, তিনি অযুত বৎসর কাল চন্দ্রলোকে বাস করেন । ৫৭
যিনি গীতার এক অধ্যায়ের, এক শ্লোকের বা এক চরণের অর্থ স্মরণ করিতে করিতে দেহত্যাগ করেন, তিনি পরম পদ প্রাপ্ত হন । ৫৮
অন্তিমকালে গীতার্থ পাঠ বা শ্রবণ করিলে মহাপাতকী ব্যক্তিও মুক্তিভাগী হইয়া থাকেন । ৫৯
যিনি গীতাপুস্তক সংযুক্ত হইয়া প্রাণত্যাগ করেন, তিনি বৈকুণ্ঠধামে যাইয়া বিষ্ণুর সহিত আনন্দ ভোগ করেন । ৬০
গীতার এক অধ্যায় সহযোগে মৃত্যু হইলে মনুষ্যজন্ম লাভ হয় এবং পুনর্বার গীতাভ্যাস করিয়া উত্তমা মুক্তিলাভ করা যায় । ৬১
'গীতা' এই শব্দ উচ্চারণ করিয়া মৃত্যু হইলেও সদ্গতি লাভ হয় । যে কর্মই অনুষ্ঠান করা হউক, তৎকালে গীতা পাঠ করিলে সেই কর্ম নির্দোষ হইয়া সম্পূর্ণ ফলদানে সমর্থ হয় । ৬২
যিনি পিতৃলোকের উদ্দেশ্যে শ্রাদ্ধে গীতাপাঠ করেন, তাঁহার পিতৃগণ নরকস্থ থাকিলেও সন্তুষ্ট হইয়া স্বর্গে গমন করেন । ৬৩
গীতাপাঠে সন্তুষ্ট পিতৃগণ শ্রাদ্ধে তৃপ্তিলাভ করিয়া পিতৃলোকে গমন করেন এবং পুত্রকে আশীর্বাদ করিয়া থাকেন । ৬৪
ধেনুপুচ্ছ (চামর) সহিত গীতাপুস্তক দান করিলে দাতা (মানুষ) সেই দিনই সম্যক্রূপে কৃতার্থ হন । ৬৫
যিনি সুবর্ণ-সংযুক্ত করিয়া গীতাপুস্তক বিদ্বান্ বিপ্রকে দান করেন, তাঁহার আর পুনর্জন্ম হয় না । ৬৬
যিনি শতখণ্ড গীতাপুস্তক দান করেন, তিনি ব্রহ্মলোক প্রাপ্ত হন, তাঁহার আর পুনরাবৃত্তি হয় না । ৬৭
গীতাদানের প্রভাবে দাতা বিষ্ণুলোক প্রাপ্ত হইয়া সপ্তকল্পকাল বিষ্ণুর সহিত পরম সুখে বাস করিতে পারেন । ৬৮
গীতার্থ সম্যক্রূপে শ্রবণ করিয়া যিনি গীতা দান করেন, শ্রীভগবান্ তাঁহার প্রতি প্রীত হইয়া তাঁহার অভীষ্ট প্রদান করেন । ৬৯
হে ভারত, চাতুর্বণ্য মধ্যে মনুষ্যদেহ ধারণ করিয়া যে ব্যক্তি অমৃতরূপিণী গীতা পাঠ বা শ্রবণ করে না, সে প্রাপ্ত অমৃত হস্ত হইতে ফেলিয়া দিয়া বিষ ভক্ষণ করে । ৭০
সংসার-দুঃখার্থ ব্যক্তি গীতাজ্ঞান লাভ এবং গীতামৃত পান করিয়া ভগবানে ভক্তিলাভ করতঃ সুখী হইয়া থাকেন । ৭১
জনকাদি রাজগণ গীতা আশ্রয় করিয়া নিষ্পাপ হইয়া পরম পদ লাভ করিয়াছিলেন । ৭২
গীতাপাঠে উচ্চ-নীচ ইতর-বিশেষ নাই, ব্রহ্ম-স্বরূপিণী গীতা সমভাবে সকলকেই জ্ঞান দান করেন । ৭৩
যে অভিমান বা গর্ববশতঃ গীতা(র) নিন্দা করে, সে প্রলয়কাল পর্যন্ত ঘোর নরকে বাস করিয়া থাকে । ৭৪
যে মূঢ়াত্মা অহঙ্কারবশতঃ গীতার্থ অমান্য করে, সে কল্পক্ষয় পর্যন্ত কুম্ভীপাক নরকে পচিতে থাকে । ৭৫
যে ব্যক্তি সমীপে থাকিয়াও কথ্যমান গীতাব্যাখ্যা শ্রবণ না করে, সে অনেক বার শূকরযোনি প্রাপ্ত হয় । ৭৬
যে ব্যক্তি গীতা-পুস্তক চুরি করিয়া আনে তাহার কিছুই সফল হয় না, তাহার গীতাপাঠও বিফল । ৭৭
যে ব্যক্তি গীতার্থ শ্রবণ না করিয়া পরমার্থ বিষয়ে যত্নবান্ হয়, উন্মত্তের বৃথাশ্রমের ন্যায় তাহার তাহাতে কোন ফল লাভ হয় না । ৭৮
গীতা শ্রবণ করিয়া সুবর্ণ, ভোজ্য ও পট্টবস্ত্র পরমাত্মার প্রীতির জন্য নিবেদন করিবে । ৭৯
গীতা-ব্যাখ্যাতাকে নানা দ্রব্য ও বস্ত্রাদি উপকরণ (উপাচার) দ্বারা ভক্তি ও প্রীতিপূর্বক পূজা করিবে, তাহাতে ভগবান্ হরির প্রীতি জন্মিবে । ৮০
সূত বলিলেন -
যিনি শ্রীকৃষ্ণোক্ত এই পুরাতন গীতা-মাহাত্ম্য গীতা পাঠান্তে পাঠ করিয়া থাকেন, তিনি যথোক্ত ফলভাগী হন । ৮১
যিনি গীতাপাঠ করিয়া গীতা-মাহাত্ম্য পাঠ করেন না, তাঁহার গীতাপাঠে কোন ফল হয় না, তাঁহার পরিশ্রম বৃথা । ৮২
যিনি এই মাহাত্ম্য সহিত গীতা পাঠ করেন এবং যিনি শ্রদ্ধাপূর্বক উহা শ্রবণ করেন, তাঁহারা উভয়েই পরম গতি প্রাপ্ত হন । ৮৩
অর্থ সহিত, গীতা শ্রবণ করিয়া যিনি মাহাত্ম্য শ্রবণ করেন, জগতে তাঁহার পুণ্যফল সর্বসুখাবহ হইয়া থাকে । ৮৪
ইতি শ্রীবৈষ্ণবীয় তন্ত্রসারে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা-মাহাত্ম্যম্ সমাপ্তম্
_________________________________________
*Hard Copy Source:
"Sri Gita" or "Srimadbhagabadgeeta" by Gitashastri Jagadish Chandra Ghosh & Anil Chandra Ghosh. 26th Edition - June 1997 (1st Edition, 1925 from Dhaka now in Bangladesh). Published by Subhadra Dey (Ghosh), Presidency Library, 15 Bankim Chatterjee Street, Kolkata-700073. Printed by Web Impressions Pvt.Ltd., 34/2 Beadon Street, Kolkata-700006.
Hard Copy Reference:
"Srimadbhagabadgeeta Mahatmya" (Bengali), compiled by Sri Sanatangopal Das Brahmachari. 6th Edition, 2014 (First Edition 2005). Published by Shyamrup Das Brahmachari & printed by Bhaktivedanta Book Trust, Mayapur-741313, Nadia, West Bengal. © 2014 by Bhaktivedanta Book Trust.
Sanskrit Source
English Translation
এটি আধ্যাত্মিক পথের এক অর্বাচীন পথিকের ব্যক্তিগত, অবাণিজ্যিক, গবেষণা-ধর্মী প্রয়াস মাত্র ।
No comments:
Post a Comment